independenceday-2016

Press Information Bureau

Government of India

Prime Minister's Office

প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ, ২০১৮ : বিশেষ বিশেষ অংশ

Posted On :15, August 2018 15:09 IST

 

প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৭২তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তাঁর ভাষণের বিশেষ বিশেষ অংশ এখানে তুলে ধরা হল:

  • দেশ আজ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। এক নতুন শিখরে আরোহণের লক্ষ্য পূরণে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে আমাদের দেশ।
  • আমরা এমন এক সময় এই স্বাধীনতা উৎসব পালন করছি, যখন উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, মণিপুর, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে আমাদের কন্যা-সন্তানরা সাত সমুদ্র জয় করে ঘরে ফিরেছেন। তাঁরা ফিরে এসেছেন আমাদের মধ্যে সাত সমুদ্রে আমাদের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন শেষে।
  • আমাদের আদিবাসী সন্তানরা, যাঁরা দূর-দূরান্তের অরণ্যের অধিবাসী, তাঁরা এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আমাদের জাতীয় পতাকার গৌরবকে তুলে ধরতে পেরেছেন।
  • দলিত, শোষিত, বঞ্চিত কিংবা নারী – সকলের জন্যই সামাজিক ন্যায়কে আরও জোরদার করে তুলেছে আমাদের সংসদ। তাঁদের সকলের স্বার্থ সুরক্ষিত করে তোলা হয়েছে সতর্কতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে।
  • ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদাদানের দাবি দীর্ঘদিনের। ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদাদানের মাধ্যমে অনগ্রসর এবং বিশেষভাবে অনগ্রসর শ্রেণীগুলির স্বার্থরক্ষায় উদ্যোগী হয়েছে বর্তমান সংসদ।
  • বন্যার কারণে যে সমস্ত মানুষ তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন কিংবা অশেষ দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন, তাঁদের আমি এই মর্মে আশ্বাস দিতে চাই যে সমগ্র দেশ রয়েছে তাঁদের পাশেই। তাঁদের ত্রাণ ও সাহায্যের জন্য চেষ্টা চলছে পুরোদমে। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের সকলকে জানাই আমার আন্তরিক সমবেদনা।
  • জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের ১০০ বছর পূর্তি আগামী বছরটিতে। দেশের স্বাধীনতার স্বার্থে জনতা আত্মবলিদান দিয়েছেন। তাঁদের ওপর শোষণের মাত্রা ছিল সীমাহীন। জালিয়ানওয়ালাবাগের সেই ঘটনায় যে বীর ও সাহসীরা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে আমরা অনুপ্রেরণা লাভ করি। সেই সমস্ত নির্ভিক হৃদয়কে আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আমি সম্মান ও অভিবাদন জানাই।
  • ভারত বর্তমানে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ অর্থনীতির একটি দেশে পরিণত হয়েছে।
  • যে সমস্ত বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশবাসীর পক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে আমি আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে অভিবাদন জানাই। জনসাধারণের সেবায় আমাদের সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী এবং পুলিশবাহিনী দিবারাত্র জীবনপণ সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকার গৌরব ও মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখাই তাঁদের জীবনের লক্ষ্য।
  • স্বাধীনতার পরে বাবা আম্বেদকর সাহেবের উদ্যোগ ও নেতৃত্বে এক বিশেষ অন্তর্ভুক্তিমূলক সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিল। এক নতুন ভারত গঠনের সঙ্কল্প সঙ্গে নিয়েই তার সেই আত্মপ্রকাশ।
  • এক স্বনির্ভর, শক্তিশালী এবং সততঃ নিরন্তর উন্নয়নমুখী হয়ে উঠতে ভারতকে। শুধুমাত্র বিশ্বাসযোগ্যতাই নয়, কার্যকারিতার দিক থেকেও ভারতকে আরও এক উন্নত স্থানে দেখতে আমরা আগ্রহী। দেশকে আমরা সেইভাবেই গড়ে তুলতে চাইছি।
  • ১২৫ কোটি দেশবাসীর কঠোর শ্রম, স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা যখন একযোগে কাজ করে যায়, তখন সাফল্য অর্জিত না হওয়ার কোন কারণ থাকতে পারে না।
  • ২০১৪ সালে শুধুমাত্র একটি সরকার গঠনের মধ্য দিয়েই ১২৫ কোটি ভারতবাসী থেমে থাকেননি। পরিবর্তে, ভারতকে নিরন্তরভাবে আরও উন্নত করে তুলতে চেষ্টা চালিয়ে গেছেন তাঁরা। এটাই হল ভারতের আসল শক্তি।
  • গত চার বছর ধরে যে সমস্ত কাজ আমরা করে চলেছি সেদিকে আপনারা যদি একবার ফিরে তাকান তাহলে বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করবেন যে কি অসম্ভব গতিতে দেশ এগিয়ে চলেছে এবং কি দ্রুততার সঙ্গে আমরা অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছি।
  • ২০১৩ সালে যেভাবে কাজ হত সেভাবে যদি আমরা কাজ করে যেতাম তাহলে হয়তো কয়েক শতাব্দী লেগে যেত ভারতকে পুরোপুরিভাবে উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজকর্মের অভ্যাসমুক্ত করে তুলতে কিংবা দেশের প্রতিটি প্রান্তে বিদ্যুতের সুযোগ পৌঁছে দিতে অথবা গ্রাম ও শহরাঞ্চলের প্রত্যেক মহিলাকে এলপিজি সংযোগ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসতে। যদি আমরা ২০১৩-র সেই গতিতে কাজ করতাম, তাহলে একটি সমগ্র প্রজন্ম লেগে যেত অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সারা দেশকে যুক্ত করার কাজে। বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণের কাজে আমরা এইভাবেই দ্রুততর গতিতে এগিয়ে যেতে আগ্রহী।
  • গত চার বছরে পরিবর্তন বা রূপান্তরের এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে আমাদের দেশ। এক নতুন আগ্রহ, উৎসাহ এবং সাহসিকতার সঙ্গে জাতি ক্রমশঃ এগিয়ে চলেছে। মহাসড়ক নির্মাণের কাজ এখন দ্বিগুণ এবং গ্রামে বাসস্থান নির্মাণের সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • দেশে এখন রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদনের পাশাপাশি রেকর্ড সংখ্যক মোবাইল ফোন উৎপাদিত হচ্ছে। ট্র্যাক্টর বিক্রয়ের সংখ্যাও এখন এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে।
  • স্বাধীনতার পরে এই প্রথম সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিমান সংগ্রহ করছে আমাদের দেশ।
  • দেশে এখন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নতুন নতুন আইআইএম, আইআইটি এবং এইম্‌স।
  • ছোট ছোট স্থানগুলিতে নতুন নতুন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচিকে আরও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। টায়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরগুলিতে স্টার্ট আপ কর্মসূচি উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করছে।
  • প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি ‘কমন সাইন’ অভিধান সংকলনের কাজও বর্তমানে এগিয়ে চলেছে।
  • প্রযুক্তি ও আধুনিকীকরণের সুযোগ এখন সম্প্রসারিত দেশের কৃষিক্ষেত্রেও। আমাদের কৃষকরা বর্তমানে ক্ষুদ্র সেচ, বারি সিঞ্চন এবং বিন্দু বিন্দু সেচ ব্যবস্থার সঙ্গে ক্রমশঃ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।
  • আমাদের সেনাবাহিনী বিপর্যয় কবলিত মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সহানুভূতি ও সহমর্মিতার সঙ্গে। তাঁরাই আবার শত্রুপক্ষের ওপর আঘাত হানতে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালিয়ে যাচ্ছেন।
  • নতুন নতুন উদ্দেশ্যকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এগিয়ে চলা উচিৎ। কারণ, আমাদের লক্ষ্য যদি অস্বচ্ছ বা অস্পষ্ট থাকে, তাহলে অগ্রগতি কিন্তু অসম্ভব। একসঙ্গে অনেকগুলো বছর কেটে গেলেও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আমরা তখন কুল খুঁজে পাব না।
  • কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের মূল্যকে আকর্ষণীয় করে তোলার মতো এক সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি আমরা। বহু শস্যেরই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে উৎপাদন ব্যয়ের দেড়গুণেরও বেশি।
  • ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে খোলাখুলিভাবে তাঁদের আগ্রহ দেখানোর ফলে তাঁদের সাহায্যেই আমরা জিএসটি-র সফল বাস্তবায়ন সম্ভব করে তুলতে পেরেছি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে তা এক নতুন আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে।
  • দেশের কল্যাণের স্বার্থে বিশেষ সাহস ও সদিচ্ছার সঙ্গেই রূপায়িত হয়েছে ‘বেনামি সম্পত্তি আইন’।
  • ভারতকে এক সময় অর্থনীতির দিক থেকে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ বলে মনে করত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কিন্তু আজ তারাই আবার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে শুরু করেছে যে সংস্কার কর্মসূচির ওপর আমাদের গুরুত্ব আমাদের মূল নীতিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে।
  • এক সময় ‘লাল ফিতের ফাঁস’ কথাটি প্রায়ই ব্যবহার করা হত। আর আজ ‘রেড কার্পেট’-এর বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে সর্বত্র। বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার র‍্যাঙ্কিং-এ আমরা পৌঁছে গিয়েছি ১০০তম অবস্থানে। সমগ্র দুনিয়া এখন বিশেষ গর্বের সঙ্গেই লক্ষ্য করছে আমাদের এই সাফল্য।
  • এক সময় বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে ‘ভারত’ কথাটির অর্থই ছিল ‘নীতির দিক থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত’ এবং ‘বিলম্বিত সংস্কার’-এর একটি দেশ। কিন্তু আজ ভারতকে বর্ণনা করা হচ্ছে ‘সংস্কার, সংস্কার প্রচেষ্টা, কাজ ও সাফল্য এবং রূপান্তরমুখী’ একটি দেশ হিসাবে।
  • ‘পাঁচটি প্রায় ভেঙে পড়া’ দেশের মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হত ভারতকে। কিন্তু বর্তমানে বলা হচ্ছে যে বহু কোটি ডলার বিনিয়োগের একটি সঠিক গন্তব্যভূমি হল আমাদের ভারত।
  • ভারতের অর্থনীতি প্রসঙ্গে বলতে শোনা যাচ্ছে যে ‘ঘুমন্ত হাতি এখন ঘুম ভেঙে দৌড়তে শুরু করেছে’। বিশ্ব অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির মতে আগামী তিন দশকে বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তিকে আরও মজবুত করে তুলতে পারবে ভারত।
  • আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মঞ্চে ভারতের মর্যাদা এখন বিশেষভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই মঞ্চগুলিতে ভারত এখন তার বক্তব্য যথেষ্ট বলিষ্টভাবেই পেশ করতে পারছে।
  • অতীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ লাভ করার জন্য ভারতকে অপেক্ষা করতে হত। কিন্তু এখন এই ধরণের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান নিজেরাই এগিয়ে আসছে ভারতকে সদস্যপদ দেওয়ার জন্য। বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের কাছে আশার আলো জাগিয়ে তুলেছে ভারত। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হচ্ছে সমগ্র বিশ্বেই।
  • খেলাধূলার জগতেও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখন বেশ ভালোরকমই সাড়া জাগিয়ে তুলেছে।
  • উত্তর-পূর্ব ভারতের সুদূরতম গ্রামটিতেও পৌঁছে গেছে বিদ্যুতের সুযোগ।
  • মহাসড়ক, রেলপথ, আকাশপথ, জলপথ এবং তথ্যপথের প্রসার ও অগ্রগতির ক্ষেত্রেও উত্তর-পূর্ব ভারত একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে।
  • উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তরুণ ও যুবকরা তাঁদের নিজের নিজের এলাকায় এখন বিপিও স্থাপন করছেন।
  • জৈব কৃষি পদ্ধতির একটি বিশেষ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। উত্তর-পূর্ব ভারতে স্থাপিত হতে চলেছে একটি ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়।
  • এক সময় উত্তর-পূর্ব ভারত ছিল দিল্লি থেকে শতেক যোজন দূরে। কিন্তু মাত্র চার বছরের মধ্যেই দিল্লিকে আমরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসার কাজে সাফল্য অর্জন করেছি।
  • আমাদের দেশে মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশেরই বয়স ৩৫ বা তার আশেপাশে। কাজের প্রকৃতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও এক বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দেশের তরুণ ও যুবকরা। স্টার্ট আপ, বিপিও, ই-কমার্স কিংবা মোবিলিটি – যাই হোক না কেন, নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্রে দেশের তরুণ ও যুবকদের এখন স্বচ্ছন্দ বিচরণ। দেশকে বর্তমানে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সঙ্কল্পবদ্ধ আমাদের তরুণ ও যুবসমাজ।
  • মুদ্রা ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে দেশের ১৩ কোটি মানুষকে যা হল আমাদের এক বড় ধরণের সাফল্য। ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে ৪ কোটিই হলেন তরুণ ও যুবক যাঁরা এই প্রথম ঋণ সহায়তা লাভ করে স্বনিযুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনভাবে এগিয়ে চলেছেন। পরিবর্তনশীল পরিবেশ ও পরিস্থিতির এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ৩ লক্ষ গ্রামে সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র পরিচালনার দায়িত্বেও রয়েছেন আমাদের এই তরুণ ও যুবকরা। তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে নিমেষের মধ্যে বহির্বিশ্বের সঙ্গে প্রতিটি গ্রাম এবং প্রত্যেক নাগরিককে যুক্ত করে তোলার কাজে তাঁরা ব্যস্ত রয়েছেন।
  • উদ্ভাবনী শক্তির সাহায্যে আমাদের বিজ্ঞানীরা ‘নাবিক’-এর সূচনা করতে চলেছেন। মৎস্যজীবী এবং অন্যান্যদের বিশেষ উপকারে আসবে এই কর্মসূচিটি।
  • বহির্মহাকাশে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে মানুষ সহ মহাকাশ যান পাঠানোর সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে আমাদের দেশ। ভারতই হল চতুর্থ দেশ যে এই ঝুঁকি গ্রহণ করতে পেরেছে।
  • আমরা বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রের আধুনিকীকরণ ও অগ্রগতির দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি। দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তির আগেই কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করে তোলার স্বপ্ন রয়েছে আমাদের।
  • আধুনিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রের সুযোগ-সুবিধাকে দিগন্তপ্রসারী করে তুলতে আমরা আগ্রহী। ‘বীজ থেকে বাজার’ পর্যন্ত মূল্য সংযোজনের কাজেও আগ্রহ রয়েছে আমাদের। বিশ্ব বাজারে দেশের কৃষক সাধারণের শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরাই প্রথম কৃষি রপ্তানি নীতি রূপায়ণের পথে অগ্রসর হয়েছি।
  • বর্তমানে জৈব কৃষি পদ্ধতি, নীল বিপ্লব, মধুর বিপ্লব, সৌরশক্তি চালিত কৃষি ব্যবস্থার নতুন নতুন পথ উন্মুক্ত করে দিতে এগিয়ে চলার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
  • মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হল ভারত।
  • ভারত থেকে মধু রপ্তানির পরিমাণও এখন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • আখ উৎপাদকদের ক্ষেত্রে একটি খুশির খবর হল এই যে ইথানলের উৎপাদন এখন বৃদ্ধি পেয়েছে তিনগুণের মতো।
  • গ্রামীণ অর্থনীতিতে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলির গুরুত্বও কিছু কম নয়। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন, কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের সহায়সম্পদের প্রসার ঘটানোর কাজেও আমরা আগ্রহী। গ্রাম ভারতকে আমরা আরও দক্ষ করে তুলতে চাই এবং এই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছি আমরা।
  • খাদিপণ্যের বিক্রিও এখন বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ মাত্রায়।
  • সৌরশক্তি চালিত কৃষি পদ্ধতিতে এখন আগ্রহী হয়ে উঠেছে দেশের কৃষক সমাজ। এই কারণে কৃষিক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি, সৌর জ্বালানি বিপণনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের দ্বারও এখন তার কাছে উন্মুক্ত।
  • অর্থনৈতিক বিকাশ ও অগ্রগতির পাশাপাশি, মানবজীবনের মর্যাদা বৃদ্ধির বিষয়টিকেও আমরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। তাই, একজন সাধারণ মানুষ যাতে শ্রদ্ধা, সম্ভ্রম ও গর্বের সঙ্গে তাঁর জীবন অতিবাহিত করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আমরা নির্দিষ্ট কর্মসূচিগুলি নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে আগ্রহী।
  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বচ্ছতা অভিযানের মাধ্যমে ৩ লক্ষ শিশুকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।
  • সত্যাগ্রহ আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন গান্ধীজি। তাঁর কাছ থেকে এই অনুপ্রেরণা লাভ করে ‘স্বচ্ছতাগ্রহ’কে সফল করে তুলতে আমরা আগ্রহী। তাঁর সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতে কোটি কোটি ‘স্বচ্ছতাগ্রহী’ স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করে তোলার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থেই শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন তাঁর প্রতি।
  • দেশের দরিদ্রতম ব্যক্তিটির কাছেও স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’ অভিযানের সূচনা করেছে। এই কর্মসূচিটির আওতায় বর্তমানে যে কোন ব্যক্তি কোন ভালো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন।
  • ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্য বিমার আওতায় নিয়ে আসা হবে দেশের ১০ কোটি পরিবারকে। অর্থাৎ, নাগরিকদের ৫০ শতাংশের কাছেই এই সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি পরিবার বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন।
  • স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তির ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা লাভের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের যাবতীয় বাধা ও অসুবিধা দূর করবে প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার। এই লক্ষ্য পূরণে প্রযুক্তির পদ্ধতিগত ব্যবস্থাকেও আমরা উন্নত করে তুলেছি।
  • ‘প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য অভিযান’-এর সূচনা হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। ভয়ঙ্কর রোগ-ব্যাধির সমস্যাগুলি থেকে সাধারণ মানুষকে রেহাই দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ।
  • স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত পরিবার এবং তরুণ ও যুবকদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। টায়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরগুলিতে নির্মাণ করা হবে নতুন নতুন হাসপাতাল। স্বাস্থ্যকর্মীও নিযুক্ত হবেন প্রচুর সংখ্যায়। আগামী বছরগুলিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধারও বিশেষ প্রসার ঘটবে।
  • এই চার বছরে দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নে আমরা চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। এক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে প্রকাশ যে গত দু’বছরে দারিদ্রসীমার ওপরে উঠে এসেছেন ৫ কোটি মানুষ। দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি। কিন্তু দালালদের খপ্পরে পড়ে দরিদ্র সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচির সুযোগ ঠিকমতো ভোগ করতে পারছেন না।
  • সমস্তরকম গলদ ও ফাঁকফোকর দূর করার জন্য সরকারিভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কালো টাকা ও দুর্নীতিকে নির্মূল করার কাজে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের এই সমস্ত পদক্ষেপের ফলেই ৯০ হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় ঘটেছে সরকারি কোষাগারে।
  • যাঁরা সৎ, তাঁরাই কর মিটিয়ে দেন। তাঁদের অবদানেই রূপায়িত হয় আমাদের কর্মসূচিগুলি। তাই, কৃতিত্ব প্রাপ্য করদাতাদের, সরকারের নয়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিগত ৭০ বছরে প্রত্যক্ষ করদাতার সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ কোটি। কিন্তু সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ২৫ লক্ষে।
  • দীর্ঘ ৭০ বছরে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৭০ লক্ষ। কিন্তু জিএসটি রূপায়ণের মাত্র এক বছরের মধ্যেই ১৬ লক্ষ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পেরেছি আমরা।
  • কালো টাকার দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দিতে পারি না। জানি বাধা রয়েছে অনেক। কিন্তু তবুও আমি পিছিয়ে আসব না। দিল্লির রাস্তায় কিন্তু ক্ষমতার দালালদের এখন আর দেখা যায় না।
  • স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে অনলাইন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার আমরা সূচনা করেছি। তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারকে আমরা নিয়ে গিয়েছি সর্বোচ্চ মাত্রায়।
  • শর্ট সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে আমরা নিয়োগ করব মহিলা আধিকারিকদের। স্বচ্ছতা পুরোপুরি বজায় থাকবে আমাদের সমগ্র প্রক্রিয়াটিতে। পুরুষ আধিকারিকদের মতোই সমান সুযোগ ও অধিকার লাভ করবেন মহিলা আধিকারিকরা।
  • ধর্ষণের ঘটনা নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। কিন্তু যে যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় ধর্ষিতাকে, তা কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর। এই সত্যটি উপলব্ধি করা উচিৎ দেশের জনসাধারণের। ধর্ষিতার কষ্ট, যন্ত্রণা ও ভয়কে অনুভব ও উপলব্ধি করা প্রয়োজন প্রত্যেকেরই।
  • আসুরিক মানসিকতা ও কাজকর্ম থেকে সমাজ তথা দেশকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করতে হবে। আইন তার নিজের পথেই চলবে। আর ঐ ধরণের দুষ্কর্ম বন্ধ করতে হবে আমাদের। তাই, আমরা আক্রমণ করব সেই মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গিকেই। এই ধরণের বিকৃতির অবসান ঘটাতে কাজ করে যাওয়া উচিৎ আমাদের।
  • তিন তালাক প্রথা মুসলিম মহিলাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। যাঁরা তালাক পাননি তাঁদের দুরাবস্থাও কম কিছু নয়। তাই, সংসদের বাদল অধিবেশনে একটি আইন বলবৎ করে মুসলিম মহিলাদের সেই যন্ত্রণা থেকে আমরা মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজও এমন কিছু কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা এই বিলের অনুমোদনের বিরোধিতা করে যাচ্ছেন।
  • নিরাপত্তা বাহিনীগুলির তৎপরতা এবং রাজ্য সরকারগুলির প্রচেষ্টার কারণে ও সেইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণের সৌজন্যে এবং সর্বোপরি জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন থেকে মুক্ত করা হয়েছে ত্রিপুরা ও মেঘালয়কে।
  • জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্যা নিরসনে শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রদর্শিত পথটিকেই শ্রেয় বলে মনে করি আমরা। ঐ পথকেই আমরা অনুসরণ করে চলব। হিংসা, ঘৃণা বা গুলিচালনার আমরা পক্ষপাতী নই বরং কাশ্মীরের দেশপ্রেমী সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমরা আরও এগিয়ে যেতে আগ্রহী।
  • আগামী মাসগুলিতে জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রামীণ জনসাধারণ তাঁদের অধিকারগুলি ভোগ করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। তাঁরা নিজেরাই তাঁদের দেখভাল করতে পারবেন যথোপযুক্তভাবে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের কাজে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ দিয়ে থাকে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে। পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহনে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে চলেছি।
  • প্রত্যেক ভারতীয়রই স্বপ্ন রয়েছে একটি করে নিজের বাসস্থান গড়ে তোলার। সেই লক্ষ্য পূরণেই রূপায়িত হচ্ছে আমাদের ‘সকলের জন্য বাসস্থান’ কর্মসূচিটি। একজন সাধারণ মানুষের ইচ্ছা ও আগ্রহ রয়েছে তাঁর বাড়িটিকে বিদ্যুতের আলোয় সাজিয়ে তোলার। তাই, প্রত্যেকটি গ্রামেই আমরা পৌঁছে দিচ্ছি বিদ্যুতের সুযোগ। রান্নাঘরের ধোঁয়া ও ঝুল-কালি থেকে মুক্তি পেতে ইচ্ছুক প্রত্যেক ভারতীয়। তাঁদের এই ইচ্ছাপূরণে সকলের জন্যই রান্নার গ্যাসের ব্যবস্থা করেছি আমরা। নির্মল পানীয় জলের চাহিদা রয়েছে প্রত্যেক ভারতবাসীর। তাই আমাদের লক্ষ্য হল সকলের জন্য জলের ব্যবস্থা করা। প্রত্যেক ভারতীয় চান যে তাঁর নিজস্ব একটি শৌচালয় গড়ে উঠুক। তাঁদের জন্য এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করে তোলা আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। আবার দক্ষতা বিকাশেও আগ্রহী প্রত্যেক ভারতবাসী। তাই, সকলের জন্য দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির ব্যবস্থাও করেছি আমরা। উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পেতে ইচ্ছুক ভারতের প্রতিটি ব্যক্তি। আর এই লক্ষ্যেই রূপায়িত হচ্ছে আমাদের সকলের জন্য স্বাস্থ্য কর্মসূচিটি। নিরাপত্তার কারণে প্রত্যেক ব্যক্তিই চান একটি করে স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ। তাঁদের এই চাহিদা পূরণে সকলের জন্যই বিমার সুযোগ আমরা সম্প্রসারিত করছি। ইন্টারনেটের সুযোগ পেতে আগ্রহী প্রত্যেক ভারতবাসী। সকলের জন্য এই সংযোগের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা। সংযোগ ও যোগাযোগ প্রসারের মন্ত্রকে সম্বল করে উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা বিশেষভাবে আগ্রহী।
  • সংঘাত ও সংঘর্ষের পথে যেতে আমাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। পথ বা সড়ক অবরোধও আমাদের কাম্য নয়। কারোর কাছে মাথা নোয়াতে আমরা মোটেই রাজি নই। তাই, দেশ কখনই থেমে থাকবে না। কোন কিছুর কাছেই নতিস্বীকার করবে না। নিরলসভাবেই সে এগিয়ে চলবে। আমাদের পৌঁছতে হবে নতুন নতুন উচ্চতায়। আগামী বছরগুলিতে প্রভূত সাফল্য ও অগ্রগতিকে বাস্তবায়িত করে তোলাই হল আমাদের স্বপ্ন।

CG/SKD/DM/…